কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম এবং ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানুন

সারা বিশ্বের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় আনন্দ এবং উৎসবের দিন হলো ঈদের দিন। বছরে দুইটি ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। তারমধ্যে কোরবানি ঈদকে বড় ঈদ বা বকরি ঈদ বলা হয়। ঈদের দিন সকল মুসলমান দলে দলে নামাজ পড়তে ঈদগাহে যায়। আজকে আমি কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরবো।

আপনি যদি কোরবানি ঈদের দিন কি কি করা যাবে আর কি কি করা যাবে না সেসব বিষয়ে জানতে চান তাহলে অবশ্যই লিখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন  এ পোষ্টের মাধ্যমে কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম সকল খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম এবং ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানুন

  • ভূমিকা
  • পবিত্র ঈদুল আযহা
  • ঈদুল আযহা কত তারিখে
  • বকরি ঈদ কবে
  • কোরবানির ঈদ কবে
  • রোজার ঈদের কত দিন পর কুরবানির ঈদ হয়
  • সৌদি আরবে ঈদুল আজহা কবে
  • বাংলাদেশে ঈদুল আজহা কবে
  • ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার মধ্যে পার্থক্য কি
  • ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম
  • ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত
  • উপসংহার

ভূমিকা

আদি পিতা আদম (আঃ) এর সময় থেকেই কোরবানির ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়। তবে আমাদের উপর যে কোরবানির নিয়ম নির্ধারিত করা হয়েছে তা হল হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর শিশুপুত্র ইসমাইল (আঃ) কে আল্লাহর রাহে কুরবানী করার উদ্দেশ্য বা অনুসরণে। তাই বর্তমান আমাদের কুরবানীকে বলা হয় সুন্নাতে ইব্রাহিমী। চলুন তাহলে এ সম্পর্কিত সকল তথ্য আমরা একে একে জেনে নিই।

পবিত্র ঈদুল আযহা

কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম জানাবো। সারা বিশ্বের মুসলিমদের সবচেয়ে বড় দুটি আনন্দ উৎসব দের দিন হল ঈদের দিন।একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর ও আরেকটি হল ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহা কে কোরবানি ঈদ বলা হয় বা বড় ঈদ বলা হয়। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের প্রিয় বস্তু কোরবানি দেওয়াকে কোরবানি বলা হয়। কুরবানী দেওয়া যায় এমন বস্তু হলো উট, দুম্বা, গরু, ছাগল, ভেড়া মহিষ ইত্যাদি।

এ সকল বস্তুর জান কোরবানির মধ্য দিয়েই পালিত হয় পবিত্র ঈদুল আযহা। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালিত হয়ে থাকে। এই দিনে মুসলিমরা সকলে ধনী গরিব ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে ঈদগাহে নামাজে জমায়েত হয়। কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম কি কি? জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ফজরের নামাজ শেষে। গোসল করে সকলের নতুন নতুন পোশাক পড়ে ঈদগাহে মাঠে যাই

আরো পড়ুনঃ কুরবানী ওয়াজিব না ফরজ – কুরবানী ঈদ ২০২৫ তারিখ

সেখানে গিয়ে দুই রাকাত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করে। দুই রাকাত নামাজ শেষে এবং মোনাজাত শেষে সকলে বাড়ি বাড়ি ফিরে এসে। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, উট, মহিষ ইত্যাদি আল্লাহর নামে কুরবানী করে থাকেন। হাদিস বর্ণিত রয়েছে আরবিতে ঈদ শব্দটির অর্থ হচ্ছে উৎসব বা উদযাপন এবং ছুটির দিন। আর আজহা শব্দের অর্থ বলিদান করা বা ত্যাগ করা।

ঈদুল আযহা কত তারিখে

অনেকেই google এ সার্চ দিয়ে ঈদ উল আজহা সম্পর্কে জানতে চান? অনেকেই প্রশ্ন করেন ঈদুল আযহা কত তারিখে কোন দিনে ইত্যাদি। চলুন সেই বিষয়ে আজকে বিস্তারিত তুলে ধরি। আরবি তারিখ অনুযায়ী প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আযহা পালিত হয়ে থাকে। ২০২৫ সালের ঈদুল আযহা জিলহজ মাসের ১০ তারিখ হবে অর্থাৎ ইংরেজি জুন মাসের ০৭ তারিখে কোরবানি ঈদ বা ঈদুল আযহা পালন করা হয়।

সৌদি আরবের ঈদ পালন হওয়ার পরের দিন বাংলাদেশে ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। ২০২৫ সালের ঈদুল আযহা সৌদি আরব যদি ২৯ জুলাই চাঁদ দেখা যায় তাহলে ০৭ই জুন বাংলাদেশের কোরবানি ঈদ ২০২৫ পালন করা হবে।এখানে সঠিকভাবে বলতে গেলে বলা যায় কোরবানি ঈদ সম্পন্ন চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে।

বকরি ঈদ কবে

ঈদুল আযহা কে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বকরি ঈদ বলে থাকে? কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম বা বকরি ঈদ এর নামাজের নিয়ম একই। তাই অনেকে জানতে চান বকরি ঈদ কবে? আমি যেহেতু ২০২৫ সালে পোস্টটি লিখছি তাই চলুন ২০২৫ সালের বকরি ঈদ কবে সেটি বলব এখন। সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশে ঈদ পালন করা হয়ে থাকে।

তাই ২০২৫ সালে সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল আযহা যদি পালিত হয় ২৮ জুন, ২০২৫ রোজ বুধবার। তাহলে আমাদের বাংলাদেশে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে ০৭ই জুন ২০২৫ রোজ শনিবার। এবার তাহলে বকরি ঈদ কবে হবে তা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। বকরি ঈদ কবে, কোরবানি ঈদ কবে, অথবা ঈদুল আযহা এ তিনটি একই শব্দ।

কোরবানির ঈদ কবে

আমরা উপরেই জেনে গেলাম যে বকরি ঈদ মানেই হচ্ছে কোরবানি ঈদ। তাহলে এখানে উপরোক্ত কথাগুলোই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বলা যায় যে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশে ঈদ পালন করা হয়ে থাকে। তাই ২০২৫ সালে সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল আযহা যদি পালিত হয় ২৮ জুন, ২০২৫ রোজ বুধবার। তাহলে আমাদের বাংলাদেশে ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হবে ২৯ শে জুন ২০২৫ রোজ শনিবার।

রোজার ঈদের কত দিন পর কুরবানির ঈদ হয়

কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম পর্বে এবার কোরবানি নিয়ে প্রশ্ন উত্তর জানুন। বাংলাদেশ কোরবানি ঈদের জন্য দীর্ঘ ১১ মাস অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিবছরে শুধুমাত্র একটা দিন কোরবানি ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে। প্রতি বছর ১১ মাস অপেক্ষা করতে হলেও রোজার ঈদের ঠিক ২ মাস ১০ দিন বা ৭১ দিন পর সাধারণত কুরবানী ঈদ বা বকরি ঈদ পালন হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ কত টাকা হলে কুরবানী ওয়াজিব সঠিক তথ্য জানুন

এই ঈদকে অনেককে বড় ঈদ বলেও বলে থাকে। কোরবানি ঈদ মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের একটি দিন। তাই বছরে একবার হলে এই দিনটির জন্য সকলের মনে অনেক চিন্তা চেতনা কাজ করে শুধুমাত্র এই দিনটির জন্য।

সৌদি আরবে ঈদুল আজহা কবে

২০২৫ সালে সৌদি আরবে ঈদুল আযহা পালিত হবে ১৮ জুন রবিবার। বর্তমানে আজ ১৮ই জুন সৌদি আরবের আকাশের চাঁদ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে।তাই বলা যায় সামনে ২৮ শে জুন রোজ বুধবার সৌদি আরবে ঈদুল আযহা পালিত হবে। সৌদি আরবসহ আরো বিভিন্ন মুসলিম দেশগুলোতেও একই দিনে ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম সৌদি আরবে একই রকম।

বাংলাদেশে ঈদুল আজহা কবে

আজকে ১৮ জুন যেহেতু সৌদি আরবের আকাশে পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। সেহেতু সৌদি আরবে ঈদ উদযাপিত হবে আগামী ২৮ জুন রোজ বুধবার।এবং সেইসাথে প্রতি বছরের ন্যায় বাংলাদেশের সৌদি আরবের একদিন পরে উদযাপিত হয়। তাই এখানে ক্লিয়ারলি বলা যায় যে কোরবানি ঈদ ২০২৫ ২৯ শে জুন রোজ শনিবার বাংলাদেশের উদযাপিত হবে।

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার মধ্যে পার্থক্য কি

গোটা বিশ্বে বছরে দুইবার পালিত হয়। একটি হলো ছোট ইট যা ঈদুল ফিতর নামে পরিচিত এবং অপরটি হল ঈদ উল আযহা কোরবানি ঈদ বা বকরি ঈদ নামে পরিচিত। এ দুটি ছবি মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল ফিতরের মধ্যে পার্থক্য কি এর সঠিক উত্তর হল। ঈদুল ফিতর রমজান মাসের শেষে উদযাপিত হয়ে থাকে। দীর্ঘ ৩০ দিন রোজা রাখার পর মুসলিমরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকেন। অপরদিকে ঈদুল আযহার জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখে পালিত হয়ে থাকে।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য গরু ছাগল ভেড়া মহিষ উট দুম্বা কুরবানীর দেওয়াকে মূলত ঈদুল আযহা হিসেবে ধরা হয়। এই ঈদকে বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করা হয় বিশেষ করে বড় ঈদ, কুরবানী ঈদ, এবং বকরি নামে। আশা করি এবার বুঝতে পেরেছেন ঈদুল ফিতরের ঈদুল আযহা নিয়ে আর আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকার কথা না। কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম গুলো এবারে নিচে জেন নেই।

ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম

ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম একই রকম। তবে কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম বা নামাজের পদ্ধতি অন্যান্য নামাজের মত নয়। ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকেই বেশি বেশি করে এই দোয়াটি পাঠ করতে হয়ঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

আরো পড়ুনঃ 

সাত পাঁচ বার তাকবীরে ঈদুল আযহার নামাজ শুরু হয়। মূলত ঈদুল আযহার দুই রাকাত নামাজ পড়তে হয় আর এই নামাজ পড়া ওয়াজিব অবশ্যই ঈদুল আযহার নামাজ জামাতের সহিত পড়তে হবে। যে কোন খোলা খোলা মাঠে ঈদের নামাজ পড়া যায়।

ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ত

প্রথম রাকাত নামাজ আল্লাহ তালার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে ছয় তাকবীরের সহিত ঈদুল আযহার দুই রাকাত নামাজ ইমামের পিছনে শুরু করছি বলে নিয়ত বাঁধতে হয়। এরপরে বলতে হবে আল্লাহু আকবার। তারপর ইমাম সাহেব সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য যে কোন একটি সূরা পড়ে রুকু সেজদা করাবেন। এরপর দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব আবারও সূরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য আরেকটি সূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে না অন্যান্য নামাজের মতই নামাজ শেষ করবেন। কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম নিয়ত সম্পর্কে জেনে নিলেন।

উপসংহার

কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম এবং ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জেনে নিলেন। পরিশেষে বলা যায় কোরবানি ঈদের নামাজের গুরুত্ব অপরিস্থিতি। ঈদ উল আযহা মুসলিম জাতির জন্য অবশ্যই রহমতের বাণী নিয়ে আসে। সকল ধনী গরিব ভেদাভেদ বলে সবাই এক কাতারে নামাজ আদায় করে।

এবং হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নির্দেশ অনুযায়ী কোরবানি ঈদের নামাজ সুন্নত। তাই মুসলিমদের অবশ্যই প্রতিবছর দুইটি ঈদে জামাতের শহীদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম। কোরবানির ঈদের নামাজের নিয়ম এবং ঈদুল আযহা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্বে আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।

Author Image
Tanore Computer
আমরা আপনাকে প্রযুক্তির দুনিয়ায় সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সবসময় প্রস্তুত।

Leave a Comment

error: Content is protected !!