বাংলাদেশ বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আদালতের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট। বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের রমনা থানায় অবস্থিত। এবার চলুন ধীরে ধীরে জেনে নেওয়া যাক এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলোঃ
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। এটি আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগ নিয়ে গঠিত। মনোযোগ সহকারে পোস্টটি পড়ুন তাহলে সকল তথ্য পেয়ে যাবেন, নিচে আরও বিস্তারিত তুলে ধরা হলোঃ
পোস্ট সূচীপত্রঃ বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট – যে তথ্য গুলো আপনার জানা দরকার
- বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কবে প্রতিষ্ঠিত হয়
- সুপ্রিম কোর্ট বলতে কী বোঝায়?
- বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম কি?
- বাংলাদেশের প্রথম মহিলা বিচারপতি কে ছিলেন?
- সুপ্রিম কোর্টের প্রধান কে?
- সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বোচ্চ বয়স কত?
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কবে প্রতিষ্ঠিত হয়
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি আসে সবার মনে। সেটি হল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? তাহলে চলুন এ প্রশ্নের উত্তরটি এবার জেনে নেওয়া যাক। সুপ্রিম কোর্ট কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার আগে জেনে নিতে হবে যে এই কোর্ট টি কারা তৈরি করেছিল। ২৬ শে মার্চ ১৯৭৪ সালে জারি করা লেটারস দ্বারা বাঙালের ফোর্ট উইলিয়ামে সুপ্রিম কোর্ট অফ জুটিকেচার দ্বারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
ব্রিটিশের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কলকাতার শহরে ১৭২৬ সালে মেয়র আদালতে স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠিত মেয়র আদালতকে ১৭২৬ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিচার ব্যবস্থার স্টাইলে প্রবর্তনের আনুষ্ঠানিক শুরু বলা যেতে পারে। তবে উক্ত আদালতের স্থানীয় ক্ষমতা বল বা এখতিয়ার খুবই সীমাবদ্ধ ছিল। শুধুমাত্র কলকাতার প্রেসিডেন্সি টাউনে এর কার্যকলাপ প্রণীত হতো। ১৭৭৩ সালে যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টে একটি রেগুলেটিং অ্যাক্ট পাস করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বিকাশে ভুলে টাকা চলে গেলে করণীয় ফেরত পাবেন যেভাবে আপনার টাকা
উক্ত সেই আইনের মাধ্যমেই রাজাকে কলকাতা একটি সুপ্রিম কোর্ট স্থাপনের অনুমোদন প্রদান করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে ১৯৭৪ সালে কলকাতায় সুপ্রিম কোর্ট স্থাপিত হয়। বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের ভূখণ্ডে এটি সর্বপ্রথম সুপ্রিম কোর্ট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বর্তমান বাংলাদেশ রাষ্ট্রে প্রথম সুপ্রিম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর।
সুপ্রিম কোর্ট বলতে কী বোঝায়
সুপ্রিম কোর্ট হল বাংলাদেশের বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ আদালত নামে পরিচিত। এটি মূলত সাংবিধানিক ভাবে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি। আরো জেনে রাখা ভালো যে, সংবিধান বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনের অধীনস্থের উদ্ভূত সকল মামলা এবং বিতর্কের জন্য আদালত হলো জাতির সর্বোচ্চ বিচার ট্রাইব্যুনাল। এখানে বলে রাখা ভালো অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোথায় অবস্থিত? তো চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কোথায় অবস্থিত।সুপ্রিম কোর্ট কোন এলাকায় অবস্থিত? উত্তরঃ রমনা, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম কি
আমার পোস্টটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিপূর্বে জেনে গেছেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম কি। তারপরও আমি আবারও বলে দিচ্ছি। বাংলাদেশের তিনটি আদালত রয়েছে জজকোর্ট, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু বাংলাদেশের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ নিয়ে গঠিত সেহেতু বুঝতেই পারছেন যে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। আশা করি বুঝতে পেরেছেন এবার যে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের নাম বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
বাংলাদেশের প্রথম মহিলা বিচারপতি কে ছিলেন
এই প্রশ্ন করে থাকেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা বিচারপতি কে? অথবা বলেন যে বাংলাদেশের মহিলা বিচারপতির নাম কি? তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক আসলেই বাংলাদেশের মহিলা বিচারপতি কে?বাংলাদেশের হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগের প্রথম বিচারপতি হলেন নাজমুনারা সুলতানা। যার জন্ম ৮ই জুলাই ১৯৫০ সালে। তিনি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
আরো পড়ুনঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার নিয়ম
তার পিতার নাম আবুল কাশেম মঈনুদ্দিন এবং মাতার নাম হল বেগম রোশিদা সুলতানা দিন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী বিচারপতির পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রথম নারী মন্ত্রী সহকারী দল এবং জেলা জজ। বর্তমানে তিনি ৭ জুলাই ২০১৭ সালে অবসরে যান।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান কে?
আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান হল প্রধান বিচারপতি। এখন জেনে নেওয়া যাক যে প্রধান বিচারপতি কেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান? আমরা জানি যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠান। আর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালত। যার জন্য এই আদালতের জন্য একজন নেয় নিষ্ঠাবান মানুষ প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ নাম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন রাষ্ট্রপতি। আবার সংবিধানের ৯৭ নাম্বার অনুচ্ছেদের বলা রয়েছে কোন কারণে প্রধান বিচারপতি পদ শূন্য হয়ে গেলে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন আপিল বিভাগের প্রবীণ বিচারক। জেনে নেওয়া ভাল যে, বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন এ এস এম সায়েম।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বোচ্চ বয়স কত
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বোচ্চ বয়স কত? অথবা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্রহণের বয়স কত? এই দুটি প্রশ্ন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে একই। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক এ সম্পর্কে বিস্তারিতঃ পূর্বে বা সর্বপ্রথম বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৬৫ বছর করা ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের 96 নাম্বার অনুচ্ছেদ সংশোধিত করা হয়েছে এবং সেখানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বা অবসর গ্রহণের সময় সর্বোচ্চ ৬৫ থেকে বাড়িয়ে দিয়ে ৬৭ বছর করা হয়েছে।
সুতরাং এখন বলতে গেলে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বা অবসর গ্রহণের সর্বোচ্চ সীমা হচ্ছে ৬৭ বছর। ধন্যবাদ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আজকে এ পর্যন্ত শেষ করছি। সুপ্রিম কোর্ট সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য যদি আপনারা জানতে চান তাহলে এই পোষ্টের নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমাদের। তাহলে আমরা সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করব।